দামেস্ক থেকে ওয়াশিংটন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক হামলা। বিগত শনিবার, ঐতিহাসিক পালমিরা শহরের কাছে এক যৌথ মার্কিন-সিরিয়ান প্যাট্রোলে আকস্মিক গুলিবর্ষণে দুই মার্কিন সেনা সদস্য এবং একজন আমেরিকান বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও তিন মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন, যাদের অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের সূত্রে বলা হয়েছে, হামলাকারী ছিল আইএসআইএসের একাকী এক সশস্ত্র ব্যক্তি, যাকে ঘটনাস্থলেই সিরিয়ান নিরাপত্তা বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে।এই হামলা বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর প্রথম মারাত্মক আঘাত। গত বছর আসাদের শাসনের অবসানের পর থেকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছেন। মাত্র এক মাস আগে আল-শারা ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক করেছেন এবং সিরিয়া আইএসআইএসবিরোধী আন্তর্জাতিক জোটে যোগ দিয়েছে। কিন্তু এই হামলা সেই নতুন সম্পর্কের ওপর ছায়া ফেলেছে।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “এটি ছিল আইএসআইএসের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সিরিয়ার বিরুদ্ধে হামলা, সিরিয়ার একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক অংশে যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই।সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এই হামলায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং বিচলিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল জানিয়েছেন, নিহতরা আইএসআইএসবিরোধী অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন। হামলার পর মার্কিন হেলিকপ্টারগুলো আহতদের দক্ষিণ-পূর্ব সিরিয়ার আল-তানফ ঘাঁটিতে স্থানান্তর করেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, “যারা আমেরিকানদের লক্ষ্য করে, তাদের জেনে রাখা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের খুঁজে বের করে নির্মমভাবে শেষ করবে।”
সিরিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে এই হামলার নিন্দা করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আল-শারা এটিকে দেশের স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে আঘাত বলে অভিহিত করেছেন। সিরিয়ান অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নুর আল-দিন আল-বাবা বলেছেন, হামলাকারী আইএসআইএস-সংশ্লিষ্ট কিনা তা তদন্ত চলছে, তবে সে চরমপন্থী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল। কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে হামলাকারী সিরিয়ান নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিল, কিন্তু সরকারি কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছে।
সংবাদ সূত্র ও ফটো ক্রেডিট – কলকাতা ২৪ নিউজ.কম
